Hemophilia is the genetic diseases (প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়া আক্রান্ত)

১৭ এপ্রিল, বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস।
সারা পৃথিবীতে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন
হিমোফিলিয়াসহ অন্যান্য রক্তক্ষরণজনিত রোগে ভুগছে। শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি এমন রোগীর
সংখ্যা আরো বেশি। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি
লাখে ২০ জন মানুষ হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত।
হিমেফিলিয়া কী?
হিমোফিলিয়া একটি
বংশানুক্রমিক জিনগত রোগ। মানবদেহে রক্ত জমাট বাঁধার জন্য কিছু বিশেষ ব্যবস্থা আছে।
রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় কাজ করে রক্তের অণুচক্রিকা এবং বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর
(বিষয়)। এদের মধ্যে বিশেষ দুটি ফ্যাক্টর কম মাত্রায় উৎপাদিত হলে রক্তের জমাট
বাঁধায় সমস্যা দেখা দেয়। এ রকম পরিস্থিতিতে শরীরের অভ্যন্তরে নিজে নিজেই রক্তক্ষরণ
শুরু হতে পারে। একেই বলে হিমোফিলিয়া।
মূলত মেয়েরা এই রোগের
জিন বহন করে, পুরুষরা আক্রান্ত হয়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরাও আক্রান্ত হতে
পারে।
হিমোফিলিয়া দুই ধরনের—হিমোফিলিয়া
এ, হিমোফিলিয়া বি। শতকরা ৮৫ ভাগ হিমোফিলিয়া রোগী হিমোফিলিয়া এ-তে আক্রান্ত।
হিমোফিলিয়া বি-এর আরেক নাম ক্রিসমাস ডিজিজ।
লক্ষণ
অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণই
হলো হিমোফিলিয়ার প্রধান লক্ষণ।
শিশুদের খতনা করার পর
অনেক সময় দেখা যায় রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না। দাঁত পড়ার সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ
হচ্ছে। অনেকের দেখা যায় হামাগুড়ি দেওয়ার কারণে হাঁটু ফুলে যায় অথবা সামান্য আঘাতে
গিড়া ফুলে যায়। অস্ত্রোপচারের পর বা দুর্ঘটনাজনিত আঘাতের পর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না।
রোগের মাত্রা ও রোগের
মেয়াদ অনুযায়ী প্রকাশ পেতে পারে আরো কিছু লক্ষণ। দীর্ঘদিন ধরে অস্থিসন্ধিতে
রক্তক্ষরণের কারণে অস্থিসন্ধির কর্মক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য
অংশেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে, যেটা খুবই
মারাত্মক। এতে সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তাই সময় থাকতেই রোগটি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে এবং সে অনুযায়ী সতর্ক থাকলে
মৃত্যুর ঝুঁকিটা কমানো যায়। রক্তক্ষরণের মাত্রা নির্ভর করে রক্তে রক্ত জমাট বাঁধার
উপাদান (ফ্যাক্টর ৮ ও ৯) কেমন পরিমাণে উপস্থিত আছে তার ওপর।
পরীক্ষা
·
রক্তের ফ্যাক্টর দুটির
পরীক্ষা।
·
রক্তের জমাট বাঁধার
ক্ষমতা পরীক্ষা।
চিকিৎসা
হিমোফিলিয়ার স্থায়ী
কোনো চিকিৎসা নেই। শিরাপথে ইনজেকশনের মাধ্যমে সেই ফ্যাক্টর শরীরে প্রবেশ করানোই
মূল চিকিৎসা। রক্তক্ষরণের কারণে অস্থিসন্ধিতে সমস্যা দেখা দিলে ফিজিওথেরাপি নিতে
হয়। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে এবং সাবধানতার সঙ্গে জীবনযাপন করলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত
প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।
হিমোফিলিয়া রোগীদের
বিশেষ কিছু সাবধানতা মেনে চলতে হয়। শরীরে আঘাত লাগতে পারে এ রকম কোনো ঝুঁকিপূর্ণ
কাজে অংশগ্রহণ না করা, মাংসে ইনজেকশন না নেওয়া, যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের পর
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া, ব্যথানাশক ওষুধ বা রক্ত তরল করে এ রকম ওষুধ
(যেমন এসপিরিন) না খাওয়া ইত্যাদি।
হিমোফিলিয়ার চিকিৎসা ও
ওষুধ বাংলাদেশে সম্ভব হলেও খুব একটা সুলভ নয়। সচেতন হলে এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি
অনেকখানি কমে যায়। তাই হিমোফিলিয়া সম্পর্কে সবার সচেতন থাকা একান্ত জরুরি।
No comments
Thank you