বজ্রপাতে আপনার টেলিভিশন এর সুরক্ষায় বানিয়েনিন প্রোটেক্টর
প্রতিবছরই শহর কিংবা গ্রামাঞ্চলে বজ্রপাত এ ঘরের বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবহার্য পণ্য নষ্ট হয় । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিভাইস টি হচ্ছে আপনার টেলিভিশন ।
বজ্রপাত কী ?
মূলত বজ্রপাত হচ্ছে মেঘের মধ্যে পুঞ্জীভূত বৈদ্যুতিক চার্জের সমষ্ঠি । যা এতই শক্তিশালী যে বাতাসের ডাই ইলেকট্রিক ইন্সুলেশন প্রোপার্টি (Die electric insulation property) ভেদকরে মাটিতে বা কোনো উঁচু স্থানে আছড়ে পড়ে ।
তাহলে উপায় ?
শক্তিশালী বজ্রপাত হলে খুব একটা করনীয় কিছু নেই তবে ছোটখাটো বজ্রপাত থেকে আমরা সহজেই রক্ষা পেতে পারি কিছু নিয়ম মেনে চললে যা লেখার শেষে যুক্ত করেছি । কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন সত্ত্বেও বজ্রপাতের কারনে টেলিভিশন কিংবা মূল্যবান যন্ত্রপাতি’র দফারফা হয়েগেছে। আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে গত কিছুদিনে প্রায় ১৪ টি টেলিভিশন দোকানে নিতে দেখেছি শুধুমাত্র এই বজ্রপাতের কারণে নষ্ট হয়েছে ।
কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে উক্ত একই সময়ে যাদের টেলিভিশন বা মূল্যবান যন্ত্রপাতি বৈদ্যুতিক প্লাগ সকেট থেকে সম্পূর্ণ খোলা ছিল ও ডিশের লাইন নেই তাদের ক্ষেত্রে এটি ঘটেনি । অর্থাৎ বজ্রপাত মূলত বৈদ্যুতিক খুঁটি বাহিত হয়ে ডিশের ক্যাবল কিংবা ইলেকট্রিক তার দ্বারা বাহিত হয়ে যন্ত্রের ক্ষতিসাধন করে ।
সমাধান কী ?
সমাধান টা খুব-ই সহজ। এমন একটি যন্ত্র লাগানো যার মাধ্যমে এই বৈদ্যুতিক প্লাগের সংযুক্তি ও ডিশ লাইনের সংযুক্তি স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বন্ধ হয়ে যায়। নিচে এমনি একটি সার্কিটচিত্র দিচ্ছি ।

এই সার্কিটের মাধ্যমে মাত্র ৪ টি রিলে সুইচ দিয়েই বাঁচাতে পারেন আপনার টিভি |
যন্ত্রের মূল কাজ --
মূলত সার্কিটে সংযুক্ত রিলে ২টি আপনার টিভি তে যুক্ত থাকা ডিশের লাইন ও পাওয়ার ক্যাবল প্লাগ কে একই সাথে বিচ্যুত করে দিবে । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা টিভি কে পাওয়ার প্লাগ থেকে খুললেও ডিশ ক্যাবলের সংযোগ কে খুলতে ভুলে যাই । আর ঠিক সে সুযোগেই বজ্রপাতের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ টিভি’র চ্যানেল বক্স থেকে শুরু অরে মাদারবোর্ড জ্বালিয়ে দেয় । কিন্তু এই সার্কিট ব্যবহার করলে ছোটখাট বজ্রপাতে আপনার টিভি কিংবা মূল্যবান যন্ত্রপাতি থাকবে সুরক্ষিত। (অন্যকোনো যন্ত্র ব্যবহার করলে ডিশলাইন সংযোগ দেবার অংশটুকু বাদ দিতে পারেন) যখন সার্কিটে পাওয়ার দেয়া থাকবে তখন রিলে গুলো সক্রিয় থাকবার কারণে টিভিতে ডিশ সংযোগ থাকবে নিচের চিত্রে যেমন দেখানো হয়েছে |

অপরদিকে সার্কিট টি অফ থাকলে রিলেও অফ থাকবে নিচের চিত্রানুযায়ী

ভালো থাকুক আপনার টিভি ।
বিশেষ সতর্কতা মূলক বার্তা
দুঃখজনক ভাবে ইদানীং প্রায় স্থানেই বজ্রহতের ঘটনা ঘটছে । সচেতনতার অভব মূলত এরজন্য দায়ী। কিছু সহজ উপায় ও কৌশল মনে রাখলে আমরা এই বজ্রপাতের হাত থেকে অনেকাংশেই রক্ষা পেতে পারি । নিচে কিছু আবশ্যকীয় উপায় তুলে ধরা হলো ।
2.জানালা থেকে দূরে থাকুন। ধাতব বস্তু স্পর্শ করবেন না ।
3.প্রত্যেকের বাড়িঘর বৈজ্ঞানিক উপায়ে বজ্রপাত প্রতিরোধী হিসেবে তৈরি করা উচিৎ । দুই ভাবে বাড়িঘরকে বজ্রপাত প্রতিরোধী করা যেতে পারে ।
ক. বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, বিশেষ করে ইস্ত্রি, ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার, এসি, মোবাইল সেট, ওভেনসহ ঘরের বিদ্যুত্ ব্যবস্থাকে সুরক্ষাকরণের জন্য ইলেক্ট্রিকেল আর্থিং করা |
4. খোলা আকাশের নিচে যেকোনো উঁচু জিনিসের প্রতি বজ্র বিদ্যুতের চার্জ বা ডিসচার্জ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেখানে লম্বা গাছ (তাল, সুপারি), বিদ্যুত্ ও টেলিফোনের খুঁটি, মোবাইল টাওয়ারসহ যে কোনো ধরনের ধাতব এমনকি বিদ্যুত্ অপরিবাহী/কুপরিবাহী জিনিসও বজ্রের বিদ্যুতকে আকর্ষণ করে। সেজন্য বজ্রপাতের সময় এগুলোর নিচে থাকা যাবে না ।
5. খোলা আকাশের নিচে কিংবা খোলা মাঠে বজ্রপাতের সময় লম্বা শিক/লাঠিযুক্ত ছাতা মাথায় দিয়ে হাঁটা যাবে না, তাহলে ছাতার মাধ্যমে চার্জিত হতে পারেন ।
6.খোলা আকাশের নিচে থাকলে বজ্রপাতের সময় সম্ভব হলে কোনো আশেপাশের ঘরে আশ্রয় নিতে হবে, না পারলে মাটিতে তাত্ক্ষণিক শুয়ে পড়তে হবে। পানির কাছে থাকবেন না, রাস্তায় সাইকেল বা মটরসাইকেলের উপর থাকলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহন করুন ।
7. নৌকা তে থাকলে এর লম্বা ছই বা মাস্তুল থেকে দূরে গিয়ে শুয়ে পড়তে হবে |
উপরোক্ত নিয়মগুলো সঠিকভাবে পালন করলে অনেকাংশেই বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বাঁচানো সম্ভব মূল্যবান প্রাণ ।
No comments
Thank you