Honey is the best food with Properties (মধু নিয়ে নানা কথন, মধুর গুনাবলী)

মধু নিয়ে নানা কথন, মধুর গুনাবলী ।


মধু 
হল এক প্রকারের মিষ্টি ঘন তরল পদার্থ, মৌমাছি অন্যান্য পতঙ্গফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবংমৌচাকেসংরক্ষণ করেএটি উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরলএটি সুপেয় বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহারে চিনির চেয়ে এর অনেক সুবিধা রয়েছে এর বিশিষ্ট গন্ধের জন্য অনেকে চিনির চাইতে মধুকেই পছন্দ করে থাকেনবাংলাদেশেরসুন্দরবনের মধু স্বাদ, রং, হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধসুন্দরবনেরবেশিরভাগ মধুকেওড়া গাছের ফুল থেকে উৎপন্ন সুন্দরবনের মাওয়ালী সম্প্রদায়ের লোকেরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রয় করে জীবন নির্বাহ করে মধুর অন্য একটি গুণ হল এটি কখনো নষ্ট হয় না৷ হাজার বছরেও মধুর গুণাগুণ নষ্ট হয় না

মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, . থেকে . শতাংশ সুক্রোজ এবং -১২ শতাংশ মন্টোজ আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনকাইম এতে চর্বি প্রোটিন নেই ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান যা আমাদের শুধুমাত্র দেহের বাহ্যিক দিকের জন্যই নয়, দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় কাজ করে

মধু মানবদেহের শিফা

মধু মহান আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ নেয়ামত এই নেয়ামতে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মধু রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিসহ নানাপ্রকারের উপকার সাধন করে কুরআনে এর নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

আর আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বতে,গাছে উচু চালে গৃহ তৈরী কর। এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষন কর এবং আপন পালনকর্তার উন্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়।তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার।নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

'মধুতে আরোগ্য নিহিত আছে।' (বুখারি : ৫২৪৮)

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,

প্রিয়নবী (সা.) এর কাছে মধু মিষ্টান্ন খুব প্রিয় ছিল। (বুখারি : ৫২৫০)


রোগ
নিরাময়ে মধুর গুণাগুণঃ-

রোগ নিরাময়ের জন্য মধু কখনো এককভাবে, আবার কখনো ভেষজ দ্রব্যের সঙ্গে মিশ্রিত করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় সফলতার সঙ্গে ব্যবহার হয়ে আসছে নিম্নে কয়েকটি রোগের চিকিৎসায় মধুর ব্যবহার উল্লেখ করা হলো-

সর্দি, কাশি স্বরভঙ্গে

চায়ের সঙ্গে মধু আদার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি শ্লেষ্মা রেগের উপশম হয় ( চামচ মধু + চামচ আদার রস)

দুই চা চামচের সমপরিমাণ মধু বাসকপাতার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি কাশি সেরে যায়

তুলসী পাতার এক চা চামচ রস সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই কাশি দূর হয়

সৈন্ধব লবণ, আমলকী, পিপুল, মরিচ ইত্যাদির সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে এক চা চামচ করে খেলে কফ স্বরভাঙ্গা ভালো হয়

খাঁটি মধুর সঙ্গে হরীতকী বচচূর্ণ মিশিয়ে লেহন করলে (চেটে খেলে) শ্বাসকষ্টের আশু উপকার পাওয়া যায়

চা চামচ মধু গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে সকালে সন্ধ্যায় খেলে সর্দিকাশি দূর হয়

হালকা গরম জলসহ মধু মিশিয়ে গড়গড়া করলে গায়কদের গলার স্বর বৃদ্ধি পায়। অনেকের মতে, এটা টনিকের মতো কাজ করে

এক চা চামচ আদার রস এবং এক চা চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে সন্ধেবেলা খেলে সর্দি সেরে যায় খিদে বৃদ্ধিপায়


আমাশয়ে মধু

রক্ত মিশ্রিত পায়খানা, তৈলাক্ত পায়খানা এবং সঙ্গে পেট কামড়ানি থাকলে তাকে আমাশয় বলে। মধু দিয়ে কিভাবে আমাশয় রোগ নিরাময় করা যায় তা তুলে ধরছি-

কচি বেল আমগাছের কচি চামড়া (বাকল) বাটার সঙ্গে গুড় মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়

কুল বা বড়ই গাছের ছাল চূর্ণের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়

৫০০ গ্রাম আতপ চাল ভেজে গুঁড়া করে এর সঙ্গে ১২৫ গ্রাম ঘি, ২৫০ গ্রাম খাটি মধু, ১২৫ গ্রাম চিনি এবং ২০টি সবরি কলা ভালোভাবে মিশিয়ে (চটকে) জ্বালাল দিয়ে খাবার উপযোগী করে / দিন নিয়মিত খেলে সব ধরনের আমাশয় ভালো হয়ে যায়


অন্যান্য রোগে মধু

শরীরের বাইরের কোন অংশের ক্ষততে মধুর প্রলেপ লাগালে অনেক সময় মলমের চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়

পানিতে অল্প মধু মিশিয়ে খেলে পাকস্থলীর ক্ষত সারে

মৌরির পানিতে মধু মিশিয়ে পান করলে দূষিত বায়ু পেট থেকে বেরিয়ে যায়

যারা খুব মোটা হচ্ছেন তাদের মেদ কমানোর জন্য মধুর সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে খেলে সুফল পাওয়া যায়

দুর্বল শিশুকে এক ফোঁটা মধু দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুবার খাওয়ালে তার স্বাস্থ্য ভালো হয় শক্তি লাভ করে

এক কাপ দুধে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায়

মধুর সঙ্গে গুড়ের রস মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়ে যায়

চক্ষু রোগে এক ফোঁটা করে মধু দিনে বার চোখে লাগাতে হবে

শিশুদের দৈহিক গড়ন, রুচি বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি পেট ভালো রাখার জন্য প্রত্যহ এক চা চামচ মধু গরম দুধ গরম পানির সঙ্গে নাশতা রাতের খাবারের সঙ্গে দিতে হবে

আমাশয় পাতলা পায়খানা থাকলে গরম পানিতে আড়াই চা-চামচ মধু মিলিয়ে শরবত বানিয়ে বারবারসেবন করতে হবে

যক্ষ্মা রোগে বাসক পাতার রস এক চা-চামচ পরিমাণ এক চা-চামচ মধু এবং এক চা-চামচ আদার রস মিশিয়ে কিছু দিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে

যক্ষ্মা রোগ ভালো হওয়ার জন্য- আধাতোলা পেঁয়াজের রস, ২৫০ গ্রাম ঘি এবং ২৫০ গ্রাম মধু মিশিয়ে একটা পাত্রে রেখে দিয়ে প্রতিদিন সকাল বিকাল খেলে এবং প্রতি রাতে শোয়ার সময় চিনি দিয়ে অল্প পরিমাণ গরম দুধ খেলে / দিনের মধ্যে যক্ষ্মা ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি

রাসূল (সা.) বলেছেন, মধু হৃদপি-কে সতেজ করে। প্রতিদিন হাতের তালুতে অল্প পরিমাণ মধু নিয়ে চেটে খেলে হৃদরোগ থাকে না

জার্মান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ . কচ বলেছেন, ‘উপযুক্ত ঘাস খেয়ে ঘোড়া যেমন তেজী হয় তেমনি নিয়মিত সকালে এক চা-চামচ করে খাঁটি মধু খেলে হৃদপি- শক্তিশালী হয়। ছাড়া মধু আয়ুও বৃদ্ধি করে।


ডায়রিয়াতে রাসূল (সা.) মধু খাওয়ানোর কথা বলছেন

ডায়রিয়া হলে খয়ের দারুচিনির গুঁড়া সমপরিমাণ সামান্য মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিনে / বার খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়

পিপুল গোল মরিচের শুকনো গুঁড়ার সঙ্গে মধু মিশিয়ে কিছু দিন নিয়মিত খেলে পুরাতন উদরাময় ভালো হয়ে যায়

কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এক গ্লাস গরম দুধ বা গরম পানিতে ২চা-চামচ মধু মিশিয়ে কয়েকবার খেতে হবে

 


সকল
প্রকার মধুর চেয়ে সুন্দরবনের মধু সর্বাধিক উপাদেয় এবং শতভাগ প্রাকৃতিক খাঁটি

সুন্দরবনের মধুও বেশ কয়েক প্রকারের যেমন---- খলিষামধু, গরানের মধু, গেওয়া মধু,কালিজিরা মধু

.খলিষা মধু :-----
এর মধ্যে খলিষামধু সবচেয়ে উত্তম সুন্দর বন থেকে যখন মধু সংগ্রহের সময় হয় তখন সমগ্র সময়ের (প্রায় / মাস ) প্রথম ভাগে ( প্রায় ১৫ দিন ) সংগ্রহ করা হয় খলিষামধু সকলের নিকট খলিষা মধুর চাহিদা সব চেয়ে বেশি খলিষা নামক এক প্রকার গাছের সাদা ফুল থেকে মৌমাছিরা এই মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে যখন সুন্দর বনে খলিষা গাছে ফুল ফোটে তখন অন্য সব গাছে মুকুল থাকলেও ফোটে না ভিন্ন স্বাদ একক ফুলের মধু হিসাবে সকলের নিকট মধু অধিক প্রিয় , চাহিদা বেশি কিন্তু উৎপাদন কম

.গরানের মধু :----
সবচেয়ে বেশি সময় বেশি পরিমানে সংগ্রহ করা হয় গরানের মধু গ্রহনযোগ্যতা উপকরিতার দিক থেকে গরানের মধুর জুড়ি নাই

.গেওয়ামধু :-----
মধু সংগ্রহের সিজনের শেষসময়ে সংগ্রহ করা হয় এই মধু গেওয়া ফুলের মধুর উপকারিতা থাকা সত্বেও তেমন চাহিদা নেই

 

.কালিজিরা মধু:-----
রসুল (সাঃ) বলেছেন একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ওষুধ এই কালোজিরা (আল হাদিস)
কালিজিরা মধুর বিভিন্ন গুণাগুণ উপকারিতা নিয়ে কিছু তথ্য...........
কালিজিরারর উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না,ঠিক তেমনি কালিজিরা মধুর অনেক উপকারিতা একটা মানুষের জন্য কালিজিরা মধুর উপকারিতা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্য কিছু তুলে ধরলাম_____

কালিজিরা সব ধরনের রোগের বিরুদ্ধে তুলনাহীন। আসুন জেনে নিই কালিজিরার এমন কিছু ব্যবহার, যেগুলো একেবারেই অপ্রচলিত।
. স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে:
.ঠান্ডা জনিত সকল রোগের ঔষধ হিসেবে
.খুসখুসি কাশি
.শরিরে ব্যাথা জনিত সকল কিছু
. মেদ কমাতে:
. দাঁতের ব্যথায়
. মাথা ব্যথায়:
.রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে
ইত্যাদি নানান রোগের ঔষধ হিসেবে কালিজিরা মধুর জুড়ি নেই ।




No comments

Thank you

Theme images by cstar55. Powered by Blogger.